বাউফল প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এমপি সমর্থিত দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় যুবলীগ নেতা রাকিব উদ্দিন রোমান (৩৪) ও ছাত্রলীগ নেতা ইশাত তালুকদার (২৪) নিহত হয়। গতকাল রবিবার সন্ধায় উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর বাজারের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত ৯জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সাংসদ সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ সমর্থিত উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন পিকু ও সাধারন সম্পাদক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুর মধ্যে স্থানীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দির্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) দুপুর বারোটার দিকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে সাধারন সম্পাদক সমর্থিত যুবলীগ নেতা রফিকুলকে বেধরক মারধর করে সভাপতি সমর্থিত ইউপি সদস্য যুবলীগ নেতা সুজন তালুকদার ও তার কর্মীরা। আহত অবস্থায় যুবলীগ নেতা রফিকুলকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর জেরে ওই দিনই রফিকুলের অনুসারীরা দুপুর দুইটার দিকে সভাপতি সমর্থিত কর্মীদের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা বশির ও ইব্রাহিমকে আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল থেকে সুস্থ্য হয়ে রবিবার সন্ধায় সভাপতি সমর্থিত যুবলীগ নেতা রফিকুল কেশবপুর বাজারে গেলে যুবলীগ কর্মী রাকিব উদ্দিন রোমান ও ইশাত তালুকদাদের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষ লাঠিসোটা ও দেশিও অস্ত্র নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন পিকুর আপন ভাই যুবলীগ নেতা রাকিব উদ্দিন রোমান ও চাচাতো ভাই ইশাত তালুকদারসহ ৬জন আহত হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আখতারুজ্জান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই নিশাতের মৃত্যু হয়। অপর দিকে রাত নয়টার সময় রাকিবকে নিয়ে আসলে কুড়ি মিনিট পড়েই তার মৃত্যু হয়। তাদের শরীরে ধারালে অস্ত্রের কোপসহ লাঠির আঘাত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এমপি আসম ফিরোজ সমর্থীত কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউপির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুর সাথে দীর্ঘ দিন ধরে আভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছে। একাধিকবার উভয় পক্ষের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু এ বিরোধ নিষ্পত্তি করতে দলের উপজেলা পর্যায়ে কোন নেতা হস্তক্ষেপ করেননি। ফলে এই বিরোধ চলমান ছিল। আর এর জের ধরেই এই জোড়া খুন সংঘটিত হয়েছে।
আজ সোমবার জেলা পুলিশ সুপার মাঈনুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদশূন করেছেন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার সকাল পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলাকায় বিপুল পরিমান পুলিশ রয়েছে।