স্টাফ রিপোর্টার
ময়মনসিংহের ভালুকায় পোলট্রি হ্যাচারির সেপটিক ট্যাঙ্কিতে পড়ে মা ও ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ধীতপূর ইউনিয়নের বহুলী গ্রামের প্রভিটা পোলট্রি হ্যাচারিতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- হৃদয় (২২), শ্রীমতি রুলি (৩০) ও তার ছেলে রুহিত বাচ্চি (৩)। ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করে। নিহত হৃদয় ওই হ্যাচারিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। হৃদয়ের বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায়।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা প্রকৌশলী সজল বাচ্চি ভালুকা উপজেলার ধলিয়া বহুলী গ্রামে অবস্থিত ওই হ্যাচারির ভেতর সপরিবারে বসবাস করে চাকরি করে আসছিলেন। ঘটনার সময় সজল বাচ্চির ছেলে রুহিত বাচ্চি আবাসিক ভবনের নিচতলায় বিশাল আকৃতির সেপটিক ট্যাঙ্কির উপরে খেলাধুলা করছিল। এ সময় হঠাৎ করে সেপটিক ট্যাঙ্কির স্লাপের ভাঙা অংশ দিয়ে নিচে পড়ে যায়।
মা শ্রীমতি রুলি ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে তার ছেলেকে পড়ে যাওয়া দৃশ্য দেখে দৌড়ে এসে তিনিও সেপটিক ট্যাঙ্কির ভিতরে লাফ দেন। পাশে থেকে হ্যাচারির শ্রমিক হৃদয় এ দৃশ্য দেখে তিনিও দৌড়ে এসে তাদের বাঁচাতে ট্যাঙ্কিতে লাফিয়ে পড়েন।
তিনজনই ট্যাঙ্কির ভেতরে পড়ে গেলে প্রথমে হ্যাচারির লোকজন তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সঙ্গে ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের আরও একটি উদ্ধারকারী দল এসে যোগ দেয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনজনের লাশই ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, বিশাল আকৃতির সেপটিক ট্যাঙ্কিতে হ্যাচারির পঁচা ডিম খোসা ফেলা হয়। সেপটিক ট্যাঙ্কির উপরের স্লাবটির বড় একটি অংশ ভেঙে যাওয়ায় ওই ভাঙা অংশটি ছালা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ছালা দিয়ে ঢাকা অংশ দিয়েই পড়ে আজকের এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভালুকা মডেল থানা পুলিশ নিহতদের লাশ থানায় নিয়ে এসেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশরাফ উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার মনিম সরোয়ার জানান, সেপটিক ট্যাঙ্কিতে তিনজন পড়ে গেলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ভালুকা মডেল থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।