মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার দক্ষিণ ভাংনাহাটী এলাকায় ঢাকা গার্মেন্টস এন্ড ওয়াশিং লিমিটেডে অগ্নিকান্ডে ১ শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪২ জন। তাদের মধ্যে ১২জনকে ঢাকা বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে আগুনের সুত্রপাত হয়।
নিহত মাসুম সিকদার (২৩) ওই কারখানার ওয়েল্ডিং অপারেটর। তিনি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার চর কুসুমহাটি গ্রামের সূর্য সিকদারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকেরা জানায়, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেশ কয়েকবার লাইনে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ১০টার দিকে কারখানার ক্যামিকেলের গুদামে আগুন দেখতে পাওয়া যায়। শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হতে চাইলে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে গেট খুলতে অস্বীকৃতি জানান।
এসময় পাশের ৫ তলা ভবনের কিছু শ্রমিক ও স্টাফ আগুন নেভাতে গেলে ক্যামিকেলের গ্যাসের গন্ধে অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে শ্রমিকেরা গেটে উপর্যুপরি আঘাত করলে কর্তৃপক্ষ গেট খুলে দিতে বাধ্য হন।
এদিকে, ভাংনাহাটী গ্রামের নূরুল ইসলামের স্ত্রী খোদেজা বেগম (৭৫) বলেন, তাঁর দুই নাতিন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের একজন মনির হোসেনের ছেলে ই্উছুব (৩২) ও হাবিবুর রহমানের ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩০)।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কারখানার স্যাম্পল শাখার শ্রমিক আবু হানিফ বলেন, তিনি ক্যামিকেলের গুদামে আগুন দেখতে পেয়ে একজনকে সেখানে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে গ্যাসের গন্ধে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফিরে এলে নিজেকে হাসপাতালে দেখতে পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গেট খুলে দেওয়ার পর আহত ও জ্ঞান হারানো শ্রমিকদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্মরত ডা. কে এম রাজমুল আহসান জানান, কারখানার কমপক্ষে ৪২ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে ১২জনকে শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে, ১০জনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও ২০জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের দেহের বাইরে দগ্ধের আলামত পাওয়া যায়নি। ধোঁয়ায় শ্বাসনালী ও দেহের ভেতরে ইনজুরি হয়ে থাকতে পারে।
শ্রীপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সাদেক জানান, আগুন নেভানোর পর ক্যামিকেলের গুদাম থেকে মাসুম সিকদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ক্যামিকেলের গ্যাসে দম আটকে মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করা হয়নি। মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাচ্ছি।
এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক পরিচয় জেনে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা বলতে রাজী হননি।
শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিয়া রাজ জানান, আগুনের খবর শোনে কারখানার ক্যামিকেল গুদামে দুটি ইউনিট আধাঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুন লাগার সঠিক কারণ তাৎক্ষণিক নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।