মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিনিধিদের দ্বারা প্রতিনিয়তই হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা।এতে সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে সরকারের।
প্রতিনিধিরা নিয়মনীতি না মেনে কোন কিছুর তোয়াক্কা ও রোগীদের কথা চিন্তা না করেই তাদের ইচ্ছা মত হাসপাতালের ভিতরেই রোগীদের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র টেনে নিয়ে মোবাইল ফোনে ছবি তুলেন। একজনের পর আরেকজন এভাবে এক রোগীর কাছ থেকেই কয়েকজন প্রতিনিধি ছবি তুলে মূল্যবান সময় ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন।
চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হলেই কার আগে কে তুলবে শুরু হয় ছবি তুলার প্রতিযোগিতা! এতে অসহায় রোগীরা পরেন চরম বিড়ম্বনায়, বৃদ্ধ সহজ সরল মানুষগুলোকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করতেও বাদ দেয়না অনেকে। অসুস্থ ও শারীরিকভাবে দুর্বল থাকায়, বা সাথে ছোট শিশু থাকায় প্রতিনিয়ত রোগীদের পরতে হয় বিব্রতকর অবস্থায়।
অনেকের গোপনীয় বিষয় ও রোগ থাকে তাদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ছবি তুলে ও রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে চরম বিড়ম্বনা ও লজ্জায় ফেলে দেয় অনেক প্রতিনিধি। এছাড়াও নারীদের রোগ ও ব্যবস্থাপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস ও ছবি তোলায় চরম বিব্রতকর অবস্থায় পরেন । অনেকে জেনে না জেনে বুঝে না বুঝে বাধ্য হয়েই ছবি তোলার জন্য দিয়ে দেয়।
আবার অনেকে প্রতিবাদ করলে কেটে পরে প্রতিনিধিগণ। এজন্যই সহজ সরল ও অসহায়দের টার্গেট করে প্রতিনিধিরা যাতে না বুঝেই চাওয়া মাত্র দিয়ে দেয়। চিকিৎসককের কক্ষে ও আশেপাশেই ঘুরঘুর করে তারা এমনকি রাতের বেলা জরুরি বিভাগের কক্ষের বাহিরেও দাঁড়িয়ে থেকে ইমার্জেন্সি রোগীদের সাথেও এমন আচরন করতে দেখা যায়।
এছাড়াও চিকিৎসকদের দরজার সামনে দাড়িয়ে থেকে রোগী ও চিকিৎসকদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে। রোগীরা কিছু বললে প্রতিনিধিরা কয়েকজন এক হয়ে রোগীর সাথে খারাপ আচরণ সহ নানা ভাবে হয়রানি করতেও বাদ দেয়না। এমনকি চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারিদেরও স্বাভাবিক কাজ কর্মে ব্যাঘাত ঘটায় অনেকে।
এবিষয়ে প্রতিনিধিদের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও কয়েকজন প্রতিনিধি জানান ,তারা রোগীদের অবস্থা বুঝে ও চেহেরা দেখে তাদের সাথে কথা বলেন ও ব্যাবস্থাপত্রের ছবি তুলেন, সিরিয়াস রোগী থাকলে তাদের সাথে কথা বলেননা, ও যে রোগীর ছবি তুলতে গেলে জারি দিবেন তার কাছে যান না৷ কে তুলতে দিবে আর কে দেবেনা তারা নাকি মুখ ও লোকের চেহেরা দেখলেই বুঝতে পারেন।
আর চিকিৎসকদের সাথে দেখা করে কথা বলে কোম্পানির নতুন ঔষধের কথা জানাতে হয়। তাদেরকে পেড, কলম ডায়েরি, বিভিন্ন উপহার দেয়ার জন্যও দেখা করতে হয় চিকিৎসকদের সাথে। উর্ধতন অফিসারের নির্দেশেই ছবি তুলে প্রধান কার্যালয়ে পাঠাতে হয় ও বাজার ধরে রাখার জন্য প্রতিযোগিতা মুলকভাবে কাজ করতে হয় বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন প্রতিনিধি।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রনয় ভূষন দাস জানান, ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সপ্তাহে ২ দিন নিয়মনীতি মেনে হাসপাতালে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে। নিয়মনীতি না মানলে ও রোগীদের হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।