মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের ( গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র) সংলগ্ন এলাকায় নবজাতক সন্তানকে একলক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাস্থানে গিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী থানার কাঁচকলা এলাকার সামছুল হকের ছেলে ইব্রাহিম। শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মৃত বাবুল মিয়ার কন্যা লাবণী আক্তরকে বিয়ে করেন। তাদের সংসার জীবনে চার বছরের কন্যা সন্তান ও দুই বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। বিক্রিকৃত নবজাতক তাদের তৃতীয় সন্তান ছিলো। ইব্রাহিম ও লাবণী তাদের সন্তানদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার টেংরা গ্রামের ( গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র) সংলগ্ন রশিদের বাড়িতে বসবাস করছেন। ইব্রাহিম পেশায় রাজমিস্ত্রি তার স্ত্রী লাবনী গারমের্স্টস কর্মী।
নবজাতক গর্ভে থাকা অবস্থায় একই এলাকার নিঃসন্তান দম্পতি রুবেল মিয়া ও দিনারা আক্তার (দিনার) সাথে স্ট্যাম্পের মধ্যে লিখিতভাবে চুক্তিপত্র করে নবজাতকের পিতা রাজমিস্ত্রি ইব্রাহিম।
কিন্তু গত রবিবার (২৮ মার্চ) ইব্রাহিমের আত্মীয় সেলিনার মাধ্যমে নবজাতকে উত্তরা আজিমপুরের বাসিন্দা মৃত মহর আলীর ছেলে রফিকের কাছে একলক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।
তবে নবজাতকে বিক্রি করার কথা অস্বীকার করে ইব্রাহিম বলেন, আমার ক্ষমতা নেই এতোগুলা ছেলেকে খাবার দেওয়া,ভালোভাবে মানুষ করার। তাই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই অন্য জায়গায় লালন পালনের জন্য দিয়েছি । সন্তান বিক্রি করে আমি টাকা নিয়ে সে টাকা খাব এটা হতেই পারে না। যাদের সাথে চুক্তি হয়েছিলো তারা আমার সন্তান কে না নেওয়ার কারনে অন্য জাগায় দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিঃসন্তান দম্পতির সাথে চুক্তি করার পরও তাদেরকে সন্তান না দিয়ে অন্য ব্যক্তির নিকট টাকার লোভে বিক্রি করে দিয়েছেন।
দিনার আক্তার জানান, আমার কোন সন্তান না থাকায় তাদের সাথে আমাদের লিখিত চুক্তি হয়। চুক্তিবদ্ধের পর থেকে গর্ভবতী মায়ের সব ধরনের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছি, এতো কিছু করার পরেও আমাকে না দিয়ে ইব্রাহিম একলক্ষ টাকার লোভে তার নবজাতক শিশুকে অন্য জাগায় বিক্রি করে দিয়েছে।
শ্রীপুর থানার এস আই মোহসীন জানান, নবজাতক বিক্রির খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি তবে নবজাতক কে পাওয়া যায়নি। নবজাতকের পিতা ইব্রহিমের মাধ্যমে জানতে পারি নবজাতককে ঢাকা আজমপুরে রফিক নামের এক ব্যক্তির কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে টাকার বিনিময়ে কিনা সেটা নিশ্চিত না।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসলিমা মোস্তারী জানান, সন্তান বিক্রি করার ঘটনাটি শুনিনি, এবিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।