মেহেরপুরে জলবায়ুর পরিবর্তন বোরো ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশংকায় চিন্তিত কৃষক
আকতারুজ্জামান, মেহেরপুরঃ
বরো ধানের শীষ আসার সাথে সাথে হঠাৎ মেহেরপুরর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়ার ফলে শীষ ফেটে যাওয়া এবং দিনের বেলায় অতিরিক্ত গরমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মেহেরপুরের বিভিন্ন মাঠের বরো ধান। ধান আবাদে কৃষকের স্বপ্নে বাধ সেধেছে প্রতিকুল আবহাওয়া। কৃষকেরা সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেও কোন সুফল পাচ্ছেন না। ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। আর কৃষি বিভাগ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনটি সৃষ্টি হয়েছে।
মেহেরপুরে এ বছর ১৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। সারা বছর পরিবারের চালের চাহিদা মোটাতে ও পরবর্তী আবাদ করতে বোরো মৌসুমে ধান চাষ করে কৃষক। এ সময়ের ধান নিজেদের খাবারের জন্য রেখে বাকি ধান বিক্রয় করে পরবর্তী আবাদে যায় কৃষক। কিন্তু এবার পরবর্তী আবাদ নিয়ে শংকিত ধান চাষিরা। উৎপাদিত ধান ঘরে তোলার পূর্বেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি। কৃষকের হাসিতে নেমে এসেছে মলিনতার ছাপ। প্রচন্ড তাপদাহ আর ভ্যাপসা গরমে জমির ধানের শীষ চিটায় পরিণত হচ্ছে। গাছ ভাল থাকলেও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধানের শীষ। ইতিপূর্বে এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়নি ধান চাষিরা। অনেকেই বলছেন গমের ন্যায় বরো ধানে ব্লাস্ট ভাইরাস।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রোগটি ইতিপূর্বে কখনও দেখেনি চাষীরা। সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেও উপকার পাচ্ছে না তারা। বিভিন্ন কোম্পাণী ও এলাকার সার বিষের দোকান থেকে পরামর্শ নিয়ে বিষ প্রয়োগ করেও সমাধান হচ্ছে না ফলে ধানের ফলন নিয়ে বিপাকে পড়েছে তারা। জমি থেকে ন্যুনতম ফসলও পাবেন না বলে জানায় তারা। রয়েছে কৃষি বিভাগের প্রতিও অভিযোগ। কৃষি বিভাগ নতুন এ রোগের কার্যকর সমাধান দিতে পারছে না বলে আভিযোগ চাষীদের।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। আর কৃষকের অভিযোগের ভিত্তিতে কৃষিবিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। যেসব জমিতে এখনও থোর আসেনি সেসব জমিতে সেচের পাশাপাশি বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি পটাশ সার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি জমিতে সব সময় হালকা পানি রাখতে পারলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।