মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
মৌসুমী রসালো ফল তরমুজ বর্তমানে টাঙ্গাইলের মধুপুরে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যাবসায়ীগন তাদের ইচ্ছেমতো দাম হাকিয়ে তরমুজ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতা ও জনসাধারণ।
নিম্ন আয়ের মানুষের এ বছরের তরমুজের স্বাদ নিতে খুবই হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানা যায়। রমজান মাস এলেই প্রতিটা রোজাদারের পরিবারে ইফতার থাকে তরমুজ সহ হরেক রকমের মৌসুমী ফলের সমাহার। কিন্ত সেই তরমুজের দাম এবার আকাশ ছোয়া। তবে দাম বৃদ্ধির কারনে অনেক রোজাদার সহ নিম্ন আয়ের মানুষ আজও তরমুজের স্বাদ নিতে পারেননি।
গত বছর মধুপুরের সর্বত্রই তরমুজের ছড়াছড়ি এবং পিচ হিসেবে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার চিত্রটা ভিন্ন! চলতি মৌসুমে বাজারে পর্যাপ্ত তরমুজের দেখা গেলেও এ বছর তরমুজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এবং তাও কেজিপ্রতি আবার ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। মধুপুর বাস্টান্ড ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজার সহ বিভিন্ন বাজার, হাট ঘুরে দেখা গেছে, কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে।
অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সাথে দাম নিয়ে রীতিমতো বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার অনেক ক্রেতা যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছেন দোকানির কাছে।
অটোচালক শফিক, হায়দার, মিন্টু সহ আরও অনেকেই বলেন, লকডাউন চলছে। ভয় নিয়ে সড়কে আসি, দিন শেষে যা আয় হচ্ছে কোনো রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। এই রোজগারে এ বছর তরমুজ খাওয়া সম্ভব হবে না।
বাজারে আসা রোজাদারসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষের প্রশ্ন তরমুজ কেজিতে বিক্রি হওয়ার কারন কি? যে তরমুজ গত বছরও মানুষ পিচ হিসেবে কিনেছে, সেই তরমুজ এ বছর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে যদি ১৫/২০ টাকা হতো তাহলে সাধ্যের মধ্যে থাকতো ; অথচ ৫০/৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ভোক্তাদের প্রশ্ন এই টাকা কি প্রকৃতপক্ষে ওই চাষি, যে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তরমুজ উৎপাদন করেছে তার পকেটে যাচ্ছে নাকি অন্য কারও পকেটে? কৃষকের তরমুজের ক্ষেত থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রেতা পর্যন্ত যারা ভোক্তার পকেট খালি করে চলেছে তাদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাজারের কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, বড় ব্যবসায়ীরা তরমুজ পাইকারী বাজার হতে শ’ হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। আমরাও কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজার মনিটরিং করলে কেজি কাহিনী উন্মোচন হবে বলে তারা মনে করছেন।
সর্বোচ্চ ২৮০ টাকা প্রতি পিছ হিসেবে বিক্রি করতে হবে তরমুজ।কেজিতে তরমুজ বিক্রি করার আর সুযোগ নেই
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও ম্যাজিষ্টেট মহোদয়কে তরমুজ এর দাম নির্ধারন করে দিয়েছেন। তরমুুজ কেজিতে নয় বিক্রি হবে পিছ হিসেবে। বড় তরমুজ সর্বোচ্চ ২৮০ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে।
অভিযান শুরু আজ ২৭/৪/২০২১, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২ঃ৩০টা পর্যন্ত গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী, ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের মনিপুর বাজার, সড়ক ঘাট বাজার, খলিফা মার্কেট এলাকায় জনস্বার্থে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন তানিয়া তাবাসসুম, সহকারী কমিশনার (ভূমি), গাজীপুর সদর, গাজীপুর।
তরমুজ, বাংগী, আমসহ মৌসুমী ফলের বাজার পবিত্র মাহে রমযানে স্থিতিশীল রাখতে ক্রেতা বিক্রেতাসহ সকলকে আহ্বান করা হয়। এসময় চালানমূল্যের চেয়ে অত্যাধিক চড়া দামে তরমুজসহ মৌসুমি ফল বিক্রয় করায় দুটি মামলায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এ দুজনকে ৬০০০-টাকা জরিমানা করা হয় এবং বাজারে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়।