শ্রীপুরে ছেলের আঘাতে পিতার মৃত্যু,
মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ছেলের মারধরে হেলাল উদ্দিন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে- এমন অভিযোগে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে লাশ দাফনে বাধা দেয়। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ বৃদ্ধের লাশটি উদ্ধার করে।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ২ নং গাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নিজমাওনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হেলাল উদ্দিন গাজীপুর মহানগরীর তেলিপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল বারীর ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নিজমাওনা এলাকায় জমি কিনে ছয় বছর যাবৎ বসবাস করে আসচ্ছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, সকালে ছেলে আব্দুল কাদির(৩০) পিতাকে বেধড়ক মারধর করে। হেলাল উদ্দিন ছেলের মারধরের বিচার চাইতে স্থানীয় জাবেদ আলী মার্কেটে আসেন। এবং ছেলের বিচারের দাবীতে এলাকাবাসীর কাছে কান্নাকাটি করে সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয় স্থানীয়রা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে আব্দুল কাদির আবার তাকে মারধর করে নিজ বাড়িতে। সন্ধ্যার দিকে ওই বৃদ্ধের ছোট বোন আয়েশা আক্তার এসে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় গাজীপুর বাজার পর্যন্ত আসলে বৃদ্ধ হেলাল উদ্দিনের মৃত্যু হয়। ওই সময় কয়েক জন লোকজন প্রাইভেট কারে লাশ নিয়ে চলে যেতে চাইলে বিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে যেতে বাধা দেয় এলাকাবাসী।
স্বজনদের দাবি, মারধর করা হয়নি। নিহতের ছেলে আব্দুল কাদির বলেন, তার বাবা মাদক সেবন করত। মাঝে মধ্যে তার পিতাকে বাধা দিতো, আজকে তার বাবা শুক্রবার বিকালে গাজীপুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক সোহরাব হোসেনের ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনতে যায়। এসময় বাবা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু বরণ করেন।
জাবেদ আলী মার্কেটের মোদি দোকানি মো. সুরুজ মিয়া বলেন, বিকাল চারটার দিকে হেলাল উদ্দিন তার দোকানের সামনে এসে বাঁশের মাচায় শুয়ে কান্নাকাটি করে ছেলের মারধরের বিচার চান এলাকাবাসীর কাছে। এসময় অনেকেই এই কান্নাকাটির চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
নিহতের ছোট বোন আয়েশা আক্তার বলেন, সকাল ১১ টার দিকে তার বড় ভাই হেলাল উদ্দিন ফোন করে জানায় তার ছেলে আব্দুল কাদির তাকে মারধর করেছে। এমন খবর পেয়ে নিহতের ছোট বোন আয়েশা আক্তার ভাই হেলাল উদ্দিন কে নিয়ে গাজীপুর বাজারে সোহরাব হোসেনের ফার্মেসিতে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়।
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. জাকির হোসেন বলেন, বৃদ্ধ লোকটির মৃত্যু নিয়ে একটি রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের ছোট বোন ও গ্রামবাসীও তার লাশ দাফনে বাধা দেয়। পরবর্তীতে আইনের আশ্রয় চাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্রীপুর থানার (উপ-পরিদর্শক) এস আই নয়ন ভূঁইয়া ঘটনাস্থল এসে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত ইমতিয়াজ মাহফুজ ভূইয়া বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহিদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে লাশের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।