মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কোচিং করতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি স্কুলছাত্রী মারুফা আক্তার (১৩)। এ ঘটনায় মেয়ের কোনো সন্ধান করতে না পেরে গাজীপুর আদালতে মামলা করেন ওই ছাত্রীর বাবা। অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতে ভালুকা পৌর শহরের বাঘরা এলাকার সিরাজ মিয়ার বাড়ি থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রী মারুফা আক্তারকে উদ্ধার করে ভালুকা থানা পুলিশ। এ সময় একই স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অপহরণকারী মোজাম্মেল ফকিরকে (৪০)। খবর পেয়ে রাতেই শ্রীপুর থানা পুলিশ ভিকটিম ও অপহরণকারীকে শ্রীপুর থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।
অপহৃত স্কুলছাত্রী মারুফা আক্তার গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের মো.আমিনুল হকের মেয়ে এবং স্থানীয় টেপিরবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। গ্রেপ্তার মোজাম্মেল ফকির উপজেলার টেপিরবাড়ি গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম উরফে নুরু ফকিরের ছেলে।
ভিকটিমের বাবা আমিনুল হক জানায়, গত ৯ আগস্ট সকালে কোচিং করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মারুফা। খোঁজাখুঁজি করে মেয়ের সন্ধান করতে পারেননি তিনি। ওইদিনই শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি নং ৪২৬ দায়ের করেন। পরের দিন ১০ আগস্ট একই এলাকার মোজাম্মেল তাকে ফোন করে জানায়, ওই ছাত্রীকে সে তুলে নিয়ে গেছে। ফোন পেয়ে মেয়ে অপহরণের বিষয়টি তিনি বুঝতে পারেন।
পরে ঘটনাটি জিডি’র তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার এসআই নাজমুল হককে জানান ভিকটিমের বাবা। ওই তদন্ত কর্মকর্তা ভিকটিমকে উদ্ধারে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। নিরুপায় হয়ে অমিনুল গাজীপুর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে ৩ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর থানায় মামলা নং ৩ এফআইআর ভুক্ত হয়। ঘটনার পর সাড়ে চার মাস ধরে মোজাম্মেল মারুফাকে নিয়ে আত্নগোপনে ছিলেন।
ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভালুকা পৌর শহরের বাঘরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, মোজাম্মেল নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নিকাহনামা করে মারুফাকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে কিছুদিন যাবৎ ওই এলাকার সিরাজ মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতো। তাদেরকে ভাড়া বাসা থেকেই আটক করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন রাসেল জানান, ঘটনার পর থেকেই মোজাম্মেল তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে পলাতক ছিল। একাধিকবার অভিযান চলিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। সোমবার রাতে ভালুকা থেকে ভিকটিম মারুফাকে উদ্ধার ও প্রধান অভিযুক্ত মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার ভিকটিম ও আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।