শ্রীপুর ,গাজীপুর, প্রতিনিধি:
শ্রীপুর পৌর এলাকার মাধখলা গ্রামে স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন রাশিদা বেগম (৪৫)। তিনি স্থানীয় ইসরাক স্পিনিং মিলে চাকুরি করতেন। রাশিদা ও তাঁর রিকশাচালক স্বামী শহিদুলের সামান্য আয়ে কোনোমতে চলত তাদের অভাবের সংসার। দুই ছেলে নিয়ে রাশিদা-শহিদুল দম্পতির ছিল সুখের সংসার।
গত (সোমবার) ৩ জানুয়ারি বাড়ি অদূরে দক্ষিণ ভাংনাহাটি এলাকার তালুকদারের ভিটা থেকে পাওয়া যায় রাশিদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। এঘটনায় মামলা দায়েরের পাঁচ দিন পর হত্যার রহস্য উদঘাটন ও সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এঘটনায় গ্রেফতার ওমর ফারুক (২০) উপজেলার লোহাগাছ বিন্দুবাড়ি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ও অপরজন রাব্বি (১৯) একই এলাকার মোঃ হাসমত আলীর ছেলে।
অভিযুক্তরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, লাকড়ি কুড়াতে গেলে ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তারা।পরে ঘটনা প্রকাশ হওয়ার ভয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে রাশিদা বেগম কে।
এর মধ্যে ওমর ফারুক হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪-ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অভিযুক্ত ওমর ফারুক ও নিহত রাশিদা বেগম পূর্বপরিচিত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আমজাদ শেখ জানান, রাশিদা বেগম বাড়ির পাশে ইসরাক স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড কারখানায় চাকুরি করতেন। গত শনিবার (০২জানুয়ারি) বাড়ির অদূরে দক্ষিণ ভাংনাহাটি এলাকার তালুকদারের ভিটা নামের গজারীবনের বিতর লাকড়ি কুড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত ওমর ফারুক গরুর জন্য ঘাস ও রাব্বি গরু চড়াচ্ছিল। এর মধ্যে অভিযুক্তরা রাশিদাকে একা পেয়ে তার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করার উদ্দেশ্যে পেছনে থেকে জাপটে ধরে। এসময় রাশিদা চিৎকার দিলে তার গলায় থাকা ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে জোর পূর্বক ফারুক ও রাব্বি ধর্ষণ করে। এদিকে রাশিদা ও ফারুক একই কারখানার চাকুরির সুবাদে ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার ভয়ে ফারুক ও রাব্বি গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ জঙ্গলে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা পরদিন জঙ্গলে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশ খবর দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমজাদ শেগ আরও জানান, হত্যার পর রাশিদার স্বর্ণের নাক ফুল ও গলায় থাকা রূপার চেইন ওমর ফারুক স্থানীয় সাঈদ নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রির জন্য যায়। পরে সাইদের দেয়া তথ্যেমতে ওমর ফারুককে গ্রেফতার করে পুলিশী হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে বোনের বাড়ি জামালপুর থেকে নাকফুল ও রূপার চেন উদ্ধার করা হয়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, হত্যার দায় স্বীকার করে ওমর ফারুক আদালতে ১৬৪-ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।