মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুরে শ্রীপুর উপজেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জোনাকীর চোখের চিকিৎসার দ্বায়িত্ব নিয়েছেন মানবতার ফেরিওয়ালা, সমাজকর্মী সাদ্দাম হোসেন অনন্ত।
চোখকে দেহের আলো বলা হয়।আর সেই চোখে যদি আলো না থাকে তাহলে দেহ মূল্যহীন।নাম তাঁর জোনাকি বয়স এগারো। জম্মের পর থেকে মায়াবী সাত রং রঙিন পৃথিবীর আলো ও মা বাবার আদর মাখা মুখ টুকু দেখা হয়নি। এ সময়ে তাঁর নতুন বই নিয়ে খেলা করা কথা।নতুন বইয়ের গন্ধে নিজে প্রফুল্ল করা।চোখে আলো না থাকায় কেড়ে নিয়েছে তাঁর সব আনন্দ-উল্লাস।ভূমিষ্ট হওয়ার পর পৃথিবীর আলাে দেখেনি সে।শিশুটি চোখের আলো ফিরিয়ে এনে স্বাভাবিক জীবন পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন মানবতার নিবেদিত প্রাণ মোঃ সাদ্দাম হোসেন অনন্ত।
জোনাকী গাজীপুরের শ্রীপুরে উজিলাবর গ্রামের অন্ধ জাকির হােসেনের মেয়ে।
শুধু জোনাকী নয়, একই পরিবারে রয়েছে আরও ছয়জন জন্মান্ধ ব্যক্তি। সাতজন অন্ধের দেখভাল করেন জোনাকির বৃদ্ধ দাদী রাশিদা বেগম। অন্যরা হলাে জোনাকীর চাচা আমির হােসেন (৪০), চাচী শিউলী আক্তার (৩০), ফুফু নাসরিন আক্তার (৩০), ফুফু হাসিনা আক্তার (৩২), বাবা জাকির হােসেন (২৫), ফুফাতো বােন রুপা আক্তার (১২)।
শ্রীপুরের নগর হাওলা (জৈনাবাজার )এলাকার প্রয়াত হাজী বেলাল হোসেনের ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মােঃ সাদ্দাম হােসেন অনন্ত।
জোনাকীর বাবা জাকির হােসেন জানান, একই পরিবারে বড় ভাই, ভাবি, দু’বােন, মেয়ে, ভাগ্নিসহ সাতজন অন্ধ। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা নেই। কেউ কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। অর্থের অভাবে কারাে চিকিৎসা হয়নি। অন্ধত্ব আর অভাবের কারণে সংসার ছেড়ে খাদিজা চলে গেছেন বহু আগেই। অভাবে অনাহারে দিন কাটে তাদের। অন্ধত্বকেই ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছেন তারা। সাতজন অন্ধের মধ্যে পাঁচজন প্রতিবন্ধী ভাতা পান। সংসারের সামান্য আয় আর প্রতিবন্ধী ভাতার টাকায় কায়ক্লেশে চলে সংসার। তিন বেলা মুখের আহার জোটে না। সংসারে আয়ের আর কোন পথ না থাকায় কোনভাবে বেঁচে থাকাটাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দাবি করেন সমাজের বিত্তবানরা সহায়তার হাত বাড়ালে অসহায় পরিবারটি মানবিক জীবন ফিরে পেত।
জোনাকীর বাবা আরও জানান, অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িছেন সাদ্দাম হােসেন অনন্ত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারকে সহায়তা করছেন। এখন জোনাকীর চোখের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। মেয়ের চোখের আলাে ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করছেন তিনি।আমি চোখে দেখতে পারিনি আমার মেয়ে চোখে দেখতে পারবে। আমি আমার মেয়ের চোখ দিয়ে এই সুন্দর পৃথিবী দেখতে পারব। আমি সাদ্দাম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি মন থেকে দোয়া করি উনি যেন সারাজীবন মানুষ সেবা করে যেতে পারেন।
জোনাকী বলেন,আমি অন্ধ হওয়ার কারণে মা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমার অনেক ইচ্ছে করে এই পৃথিবী আলো আমি দেখি,আমার মা-বাবার মুখটি আমি দেখি।
সাদ্দাম হোসেন বলেন,ডাক্তার বলেন চোখে লেন্স লাগালে জোনাকি দেখতে পারবে ইনশাআল্লাহ। ১৫ জানুয়ারি তাকে হসপিটালে ভর্তি করা হবে পরদিন তার চোখের অপারেশন হবে। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা সকলেই জোনাকীর জন্য দোয়া করবেন। ও যেন চোখের আলো ফিরে পেয়ে তাঁর পরিবারের প্রতিটি সদস্যের চোখ আলোকিত করতে পারে। বড় হয়ে যেন পরিবারের দায়-দায়িত্ব নিতে পারেন।