স্টাফ রিপোর্টারঃ
শীতের সঙ্গে সমাগত আরও একটি চিরায়ত দৃশ্য। সেটি হলো আনাচকানাচে, অসংখ্য অসহায় মানুষ পরস্পরের উত্তাপ নিয়ে জড়াজড়ি করে নিশিযাপন করবে। শীতের কামড় থেকে এই ভাগ্যহত ‘মনুষ্যশরীরগুলোকে’ রক্ষা করার জন্য গরম কাপড় ও নৈশ আশ্রয়ের ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল। সরকারিভাবে সেই ব্যবস্থা যেহেতু নেই, সেহেতু অনিবার্যভাবে খোলা আকাশকে চাঁদোয়া বানিয়ে গরিব মানুষ রাত্রিযাপন করবে। এ অবস্থার মধ্য দিয়ে অনিবার্যভাবে আরও একটি পৌষ সংক্রান্তিমুখী হবে।
প্রতিবছর এ অবস্থা চলতেই থাকবে—এটি সমাজের বেশির ভাগ মানুষ মেনে নিলেও কিছু মহৎ লোক তা মানতে পারেন না। তাঁরা নিজেদের অবস্থান থেকে সাধ্যমতো এগিয়ে আসার চেষ্টা করেন। সম্প্রতি চরজব্বার থানা এলাকায় এ রকম একটি মহৎ উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। চরজব্বার থানা অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল হক তরিক খন্দকার ‘মানবতার দেয়াল’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রম শুরু করেছেন। তিনি থানার মোড়ে একটি দেয়াল নির্ধারণ করছেন। দেয়ালের এক পাশে বিত্তবানেরা তাঁদের অপ্রয়োজনীয় জিনিস রেখে যেতে পারবেন। অন্য পাশ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যেতে পারবেন সুবিধাবঞ্চিতরা। আসন্ন শীতের কথা মাথায় রেখে তিনি এটি শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এই মহৎ উদ্যোগটি দ্রুত সুবর্ণচর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে।
ওসি জিয়াউল হক তরিক খন্দকার বলেন,দেশে হাজার ধরনের সমস্যা আছে। শুধু রাষ্ট্র তথা সরকার সেই সমস্যার সমাধান করবে, এমনটা প্রত্যাশা করা যৌক্তিক নয়। যেকোনো জাতীয় সমস্যা মোকাবিলায় ব্যক্তির অংশগ্রহণ জরুরি। ব্যক্তি যখন সংগঠিত হয় তখন বড় বড় সমস্যা সহজেই উতরে যাওয়া সম্ভব হয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে তরুণসমাজ। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বড় কোনো সংকট মোকাবিলায় তাঁরা যদি সংঘবদ্ধ হন, তাহলে সেটি জাতির মনোবল অনেক বাড়িয়ে দেয়।
‘মানবতার দেয়াল’ শীর্ষক এই কার্যক্রমের মধ্যে তারুণ্যের যে ঐকতান শুরু হয়েছে, সেটি আশাবহ। এই কার্যক্রম শুধু সুবিধাবঞ্চিত মানুষের হাতে শীতবস্ত্র বা সাধারণ পোশাক পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং জনগুরুত্বসম্পন্ন আরও অনেক বিষয় এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে।