-
- জাতীয়
- মৃত্যুর আগে ভাষাসৈনিক স্বীকৃতি চান নড়াইলের রিজিয়া খাতুন
- আপডেট টাইম : ফেব্রুয়ারি, ২০, ২০২২, ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ
- 170 বার পঠিত
নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
মৃত্যুর আগে ভাষাসৈনিক স্বীকৃতি চান রিজিয়া খাতুন বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৫২ সালে সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা অনেকে জীবন উৎসর্গ করে অমর হয়ে আছেন। ঢাকার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তৎকালীন সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে ভাষার আন্দোলন শুরু হয়। ভাষার আন্দোলনে ঢাকার ছাত্ররা দেশের ছাত্রসমাজকে রাজপথে নামার আহ্বান জানালে তার ঢেউ এসে পড়ে জেলা শহরগুলোতে। এই ঢেউ তৎকালীন নড়াইল মহকুমা শহর নড়াইল জেলাকেও স্পর্শ করেছিল। আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ নড়াইলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তারা ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে প্রকম্পিত করেছিল এই জনপদ। বাদ যায়নি ছাত্রীরাও। তখন রাস্তায় নেমে আসা ছাত্রীদের মধ্যে একজন ছিলেন রিজিয়া খাতুন। তখন তিনি ছিলেন শহরের দিলরুবা গার্লস হাই স্কুলের (বর্তমান নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) ছাত্রী। তিনি ছিলেন ইতিহাসখ্যাত নড়াইলের তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম নেতা নূরজালাল মোল্যার মেয়ে। রাজনীতির আবহে বেড়ে ওঠা রিজিয়া খাতুনও নড়াইলের ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন এবং অন্যান্য ছাত্রকর্মীদের সঙ্গে মিছিল মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন। মেয়েদের মধ্যে মিছিলে নেতৃত্ব দিতেন সুফিয়া খাতুন, রিজিয়া খাতুন ও রুবি বেগম।
২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গুলিবর্ষণের খবর সন্ধ্যায় নড়াইলে পৌঁছালে ওই রাতেই অন্যান্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রিজিয়া খাতুন নড়াইল পৌর পার্কের কালিদাস ট্যাঙ্কের পাড়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন এবং সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। ভাষা আন্দোলনে তার অবদান স্থানীয়ভাবে স্বীকৃত হলেও এখনও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত হয়নি। গুরুতর অসুস্থ অশীতিপর রিজিয়া খাতুন বর্তমানে শহরের আদালতপুর এলাকায় বসবাস করছেন। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি শয্যাশায়ী। তার মেয়ে স্বতন্ত্রা বুলবুল সন্তু ইংরেজির প্রভাষকের চাকরি ছেড়ে মায়ের সেবাযত্ন করছেন। ভাষা আন্দোলনের এই বীর যোদ্ধার একমাত্র দাবি ভাষাসৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। অসুস্থ রিজিয়া খাতুন বলেন, শহরের মহিষখোলা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা আফসার উদ্দিনের বাড়িতে বৈঠক হত। তখন ছাত্রীদের মধ্যে আফসার উদ্দিনের মেয়ে সুফিয়া খাতুন, রুবি ও আমি অন্য ছাত্রকর্মীদের সঙ্গে মিটিংয়ে অংশ নিতাম। আমরা ছাত্রদের সংগঠিত করার জন্য কাজ করেছি। মিছিলে, মিটিংয়ে, ভাষার জন্য সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। আমি এবং আরও ১০-১২ জন মিলে পৌরসভা পার্কের তৎকালীন কালিদাস ট্যাঙ্কের কাছে প্রথম শহীদ মিনার তৈরি করি। তিনি বলেন, আমি কখনই কারও কাছে কিছু চাইনি। ভাষা আন্দোলনে সরকার যদি আমার অবদানের স্বীকৃতি দেয় তাহলে হয়তো আমি প্রসন্ন চিত্তে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারব। এসব কথা বলতে গিয়ে তিনি চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি নড়াইলের নারী নেত্রী ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দিলারা বেগম বলেন, নড়াইলের ভাষা আন্দোলনে রিজিয়া খাতুনের ভূমিকা জাতীয় স্বীকৃতির দাবি রাখে। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুন্সী হাফিজুর রহমান ভাষা আন্দোলনে নড়াইল ও রিজিয়া খাতুনের ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, ১৯৫২ সালে নড়াইলে যে মিছিল হয়েছিল তাতে রিজিয়া খাতুনের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান, রিজিয়া খাতুনকে যেন ভাষাসৈনিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফ হাফিজুর রহমান খোকন বলেন, আমরা দাবি করছি সেই সময় যেসব নারী সাহসিকতার সঙ্গে ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তাদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হোক। সেই সময় মাতৃভাষার জন্য রাজপথে নেমে আসা নারী রিজিয়া খাতুনকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে এই প্রত্যাশা নড়াইলবাসীর।
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
- ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত রবিবার
- বিশ্ব ইজতেমায় জুমার নামাজে ইমামতি করবেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ
- সাড়ে ১৬ হাজার গায়েবি মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে: আইন উপদেষ্টা
- সাড়ে ২৬ ঘণ্টা পর কর্মবিরতি স্থগিত, সকাল থেকে চলবে ট্রেন
- পর্যায়ক্রমে সব ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ করা হবে : শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে হাতবোমা নিক্ষেপ, আহত ৫ বাংলাদেশি
- সাংবাদিকদের অধিকার কেবল রাষ্ট্রই নিশ্চিত করতে পারে: বিএমএসএফ খুলনা প্রতিনিধি : সাংবাদিকদের অধিকার কেবল রাষ্ট্রই নিশ্চিত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর। শনিবার ১১ জানুয়ারী বিকালে খুলনা মহানগরীর বয়রায় একটি রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত আন্ত: জেলা বৈঠকে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম শিল্প রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। আর এ শিল্পের সাথে জড়িত সাংবাদিকদের ভালো-মন্দ রাষ্ট্রেরই দেখা উচিত। কিন্তু দেশ গঠনের ৫৪ বছর পার হলেও সাংবাদিকরা যেই তিমিরে ছিলো সেই তিমিরে রয়ে গেছে। তাদের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটেনি বরং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত তারা দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করে চলছে। রাষ্ট্রযন্ত্র তাঁদের কথা ভাবছেনা। নিউনেশনের প্রবীন সাংবাদিক ইকরামুল কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ খায়রুল আলম, বাগেরহাট প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বিএমএসএফের জেলা শাখার সম্পাদক মো: কামরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান মুরাদ, কেন্দ্রীয় নেতা শাহাদাত হোসেন শাওন, কেন্দ্রীয় নেতা রহিম রানা, বাংলাদেশ বেতারের ইফফাত সানিয়া ন্যান্সি, বার্তা বাজারের খুলনা প্রধান আল মাসুম খান, নিজাম উদ্দিন স্বাধীন প্রমূখ। বৈঠকে প্রস্তাব সমর্থনের মাধ্যমে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি খুলনা জেলা শাখার কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে বাংলাদেশ বেতারের ইফফাত সানিয়া ন্যান্সিকে আহবায়ক, বাতর্তা বাজারের আল মাসুম খানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম সাংবাদিকদের কল্যাণে, অধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার চৌদ্দ দফা দাবি নিয়ে কাজ করছে। বিএমএসএফের দীর্ঘ এক যুগের পথচলা ছিলো ঐতিহ্য, সংগ্রামের এবং দাবি আদায়ে কাজ করা অনেকটা সফল হয়েছে। বিশেষ করে সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকার চেষ্টা করছি। বিএমএসএফ মাঠের সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে ১৪ দফা দাবি আদায়ে জেলা-উপজেলা ও কেন্দ্রে নানা ধরনের সভা, প্রতিবাদ সভা, সমাবেশ ও প্রতিবাদ সমাবেশ, চা-চক্র, ভার্চুয়াল সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, বিজয় শোভাযাত্রা ও বাৎসরিক মিলনমেলা আয়োজন, জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ উদযাপন , সাংবাদিকদের মূখপত্র মিডিয়া ক্যানভাস ম্যাগাজিন প্রকাশ, জার্নালিস্ট শেল্টার হোম, সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশ গঠন করে নানা ভাবে পাশে থেকে সমন্বয়, প্রতিবাদে কাজ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ১০-১১-১২ জানুয়ারী খুলনা বিভাগের আওতায় ১০টি জেলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আন্ত:বৈঠকের মাধ্যমে বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। আগামীকাল বিকেলে কুষ্টিয়ায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
- মারা গেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রবীর মিত্র
- নথি চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দুদকের চিঠি
- পেশার মর্যাদা, সুরক্ষা এবং সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব: বিএমএসএফ