নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাবনা প্রেসক্লাবের সদস্য ও দি বাংলাদেশ টুডে পত্রিকার পাবনা প্রতিনিধি আব্দুল হামিদ খানকে (৫২) মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাইফুল ইসলাম (৪৫) নামের কথিত সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এ সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও পিস্তলের আঘাতে মাথায় গুরুতর জখম হন হামিদ খান। তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানায়, সোমবার (০৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় পাবনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপ-সচিব) কাজী আতিয়ুর রহমানের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আটক সাইফুল ইসলাম পাবনা পৌর সদরের ছাতিয়ানী মহল্লার জাহাঙ্গীর কবিরের ছেলে। তিনি নিজেকে ‘ক্রাইম ফাইল’ নামে নামসর্বস্ব পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আসছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পাবনা প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সুইট জানান, ঘটনার সময় সাংবাদিক আব্দুল হামিদ খান জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপ-সচিব) কাজী আতিয়ুর রহমানের দপ্তরে বসে কথা বলছিলেন। এ সময় কথিত সাংবাদিক পরিচয়দানকারী সাইফুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত হন।
কথোপকথনের একপর্যায়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আব্দুল হামিদ খান ও সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এরই একপর্যায়ে কথিত সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম নিজ হেফাজতে থাকা লাইসেন্স করা পিস্তল বের করে হামিদ খানের মাথায় ঠেকিয়ে টিগার চাপেন। কিন্তু পিস্তল লক থাকায় গুলি বের হয়নি। এ সময় উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
এরই মধ্যে পিস্তল দিয়ে হামিদ খানের মাথায় কয়েকটি আঘাত করেন কথিত ওই ব্যক্তি। তার চিৎকারে অফিসের অন্যরা ছুটে এসে সাইফুলকে অস্ত্রসহ আটক করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদসহ আহত আব্দুল হামিদ খানের সহকর্মীরা খবর পেয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) রোকনুজ্জামান জানান, পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে কথিত সাংবাদিককে অস্ত্রসহ আটক করেছে। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অপরাধে মামলা দায়ের করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পাবনা প্রেসকাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, একজন উপসচিবের কক্ষের মধ্যে এমন ধৃষ্টতা দেখানো কখনই মেনে নেওয়া যায় না। এরা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। কথিত ওই সাংবাদিকের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানাই। সেইসাথে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
পাবনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপ-সচিব) কাজী আতিয়ুর রহমান বরেণ, ‘চোখের সামনে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য আমি লজ্জিত ও বিব্রত। সাংবাদিক হামিদ খানকে আমি চিনলেও ওই সন্ত্রাসীকে আমি চিনি না।’