শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ধানখেত থেকে পাখি তাড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে পলিথিন।
শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ধানখেত থেকে পাখি তাড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে পলিথিন।
গাজীপুরের শ্রীপুরে পাখি থেকে ফসল রক্ষায় কৃষক ব্যবহার করছেন ক্ষতিকর নিষিদ্ধ পলিথিন। এতে ফসল রক্ষা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি। ফসলের সুরক্ষা দেওয়া শেষে পলিথিনগুলো জমিতে পড়ে থাকছে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার তেলিহাটি, কাওরাইদ ও গাজীপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি গ্রামের ধানের জমিতে বাঁশের ছোট ছোট খুঁটির মাথায় বাঁধা রয়েছে বিভিন্ন রঙের পলিথিন। এক বিঘা জমিতে শত শত পলিথিন বাঁধা বাঁশের লাঠি পোঁতা রয়েছে। দূর থেকে মনে হবে সাদা বকের মেলা।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধান রোপণের পর খেতে পাখি বসে ধানের চারা নষ্ট করে ফেলে। এ জন্য জমিতে পলিথিন বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যাতে পাখি ভয়ে না বসে। তাঁরা জানান, বক, শালিক, মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ধানের জমিতে বসে ধানের চারা নষ্ট করে ফেলে।
তালতলী গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘পাখির অত্যাচারে খেতে পলিথিন দিয়েছি। না হলে একদিনেই খেতে সমস্ত ধানের চারা কাদার নিচে চাপিয়ে দেয়।’ পলিথিন তো খুবই ক্ষতিকারক, তবু কেন ব্যবহার করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তো কেউ আমাকে বলেনি। আমি মূর্খ মানুষ, এত কিছু জানি না।’
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মূয়ীদুল ইসলাম বলেন, ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। পাখি বসার জন্য জমিতে কাঠ ও বাঁশের লাঠি পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাখি ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসল ভালো রাখে। তবে কোনো কোনো অঞ্চলে পাখির পরিমাণ বেশি থাকায় সদ্য রোপণ করা ফসলের ক্ষতি করে। সে জন্য হয়তো বা ক্ষতিকর পলিথিন বেঁধে দেয়।’
মূয়ীদুল ইসলাম আরও বলেন, বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকদের সচেতন করা হবে। যাতে করে কোনো কৃষক ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পলিথিন ব্যবহার না করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নয়ন মিয়া বলেন, নিষিদ্ধ পলিথিন ফসলি জমিতে ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়। এটা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে। তাই এই বিষয়ে এখনই কৃষকদের সচেতন করা উচিত।