নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রতিবন্ধী হয়েও স্ত্রী-আর সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব এখনো নিজের কাদেই । তবুও হাল ছাড়েনি জীবন যুদ্ধে। শারীরিক ভাবে দুই পা পঙ্গু হওয়াতে সে স্বাভাবিক মানুষের মতো কাজ-কর্ম করতে পারেনা। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ভিক্ষা বৃত্তি। কারন তার পক্ষে কোন চাকরি, কিংবা ভারি কাজ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি কখনোই। আর তাই প্রতিদিনের মতোই তাকে বেড় হতে হয় দুবেলা খাবারের সন্ধানে তিন চাকার বেরিং এর বিশেষ গাড়িতে বসে। বলছিলাম গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলাধীন গোসিংগা ইউনিয়নের দরিখোঁজেখানী গ্রামের মৃত আব্দুল আলীর ছেলে ফিরোজ মিয়ার প্রতিবন্ধী জীবনের কথা।
জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারনে ফিরোজ মিয়া অন্য স্বাভাবিক মানুষের মতো চলাফেরা করতে পারেনা। তার চলার একমাএ অবলম্বন হলো তিন চাকার বেরিং দিয়ে তৈরি বিশেষ গাড়ি। শত কষ্টের মাঝেও সংসারের হাল ছাড়েনি প্রতিবন্ধী ফিরোজ। স্ত্রী সন্তানের মুখে দুবেলা খাবার জুটাতে নামতে হয় কাজে। মাথা গুজার ঠাই হিসেবে রয়েছে একচালা একটা ছাফরা ঘর।যেখানে পরিবার নিয়ে বেশ কষ্টেই দিন কাটাচ্ছেন ফিরোজ। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বড় হয়ে উঠছে সন্তানেরা । এদিকে জন্মগত প্রতিবন্ধী ফিরোজের বাড়ছেনা আয় কিংবা রুজিরোজগার।
ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশেহারা প্রতিবন্ধী ফিরোজ। ছেলেমেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে এক ঘরেই থাকতে হচ্ছে তাকে। যতটুকু জায়গায় প্রতিবন্ধী ফিরোজ ঘর বেঁধে থাকেন তাও আবার সরকারী খাসের জায়গা। যেখানে তার পূর্বপুরুষেরা বসবাস করেছিলো। পৌত্রিক সূএে পাওয়া একচালা ঘরটিতে আজও বসবাস করছেন তারা। বয়স ৫০ এর কোঠায়। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে প্রতিবন্ধী ফিরোজ তার সন্তানদের ভবিষ্যতের চিন্তায় মৃতপ্রায়। একটি ঘর হলেই যেনো সমস্ত কষ্ট মুছে যেত প্রতিবন্ধী ফিরোজের।
বর্ষার দিনগুলোতেও এই ঘরটিতে থাকতে হয় তাকে তার পরিবার নিয়ে। শুয়ে গুমানোর মতো জায়গা মাটির বিছানা থেকে আর কি উওম হতে পারে! কিন্তু তারপরও সমাজের অন্যান্য সচ্ছল পরিবার কিংবা মানুষের মতো কাটাতে ইচ্ছে হয় প্রতিবন্ধী ফিরোজের সংসার জীবন।কিন্তু তা যেনো তার কাছে শপ্নের মতো। দুঃখসুখের খেলা আশা তার একমাত্র ভেলা। দারিদ্রের চাকায় পৃষ্ট হয়ে দিশেহারা জীবনেও খুঁজছে সন্তানের ভবিষ্যৎ।
সারাদেশব্যাপী মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সাধারণ গরীব মানুষ ঘর পেয়েছে,ভূমি পেয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছ থেকে। এমন খবরে যেন নতুন শপ্ন ফিরে পেয়েছে প্রতিবন্ধী ফিরোজ মিয়ার। তাই তার আশা তাকেও যেন একটি ঘর প্রদান করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অসহায় হতদরিদ্র আর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে।
তাছারা বর্তমান সরকার গৃহহীনদের গৃহনির্মাণ করে দিচ্ছে বিনামূল্যে। প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন ধরনের ভাতার সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছেন বহু আগে থেকেই। তাই বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছে প্রতিবন্ধী ফিরোজ তার সন্তানদের এবং নিজের ভবিষ্যৎতের জন্য মুজিব শতবর্ষের একটি ঘর পাওয়ার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছে। পাশাপাশি মাননীয় সাংসদ জননেতা ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি মহোদয়ের কাছেও তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই আবেদনটি পাঠানোর অনুরুধ জানিয়েছেন। যাতে তার প্রতিবন্ধকতার কথা চিন্তা করে তাকে থাকার উপযোগী একটি ঘর দেয়া হয়।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজে অবহেলিত ও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বঞ্চিত। অনেকের পারিবারিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। জীবনযাত্রার মান অনেক নিম্ন। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে এতো বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধীকে পুনর্বাসন করা অত্যন্ত কঠিন । তাই সমাজের সচেতন সকল স্তরের বিশেষ করে বিত্তবান মানুষদের প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে এগিয়ে আসা উচিত।এবং তাদের মধ্যে যারা ফিরোজ মিয়ার মতো অসহায় তাদেরকে খোজে বেড় করে তালিকা তৈরি করে ব্যক্তি কিংবা সরকারে সব ধরনের সুজুগ সুবিধা দেয়া প্রয়োজন। তাহলেই বর্তমান বাংলাদেশ হবে মুজিব আদর্শের শপ্নের সোনার বাংলা। যেখানে না খেয়ে কিংবা গৃহহীন হয়ে রাস্তায় থাকবেনা কোন মানুষ।