স্টাফ রিপোর্টার :
রাজবাড়ী সদর উপজেলার মুলঘর ইউনিয়নের মুলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি চৌধুরী ফরিদা আক্তারের ডাস্টারের আঘাতে মাথা ফেটে আহত হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর। গত রোববার (২৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীর নাম উর্মি খাতুন। সে একই ইউনিয়নের পারসাদী গ্রামের ভ্যান চালক আয়নাল শেখের মেয়ে।
আহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাথে কথা বলে জানা যায়, রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষক চৌধুরী ফরিদা পারভীন দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান করছিলেন। একই শ্রেণি কক্ষে দুপুর ১২টার পর থেকে তৃতীয় শ্রেণির পাঠদান শুরু হয়। সাড়ে ১১টার দিকে উর্মিসহ তৃতীয় শ্রেণির অন্য শিক্ষার্থীরা মিলে বারাদ্দায় দুস্টুমি করছিলো। শ্রেণি কক্ষ থেকে শিক্ষক ফরিদা আক্তার তাদেরকে বারবার দুষ্টিমি করতে নিষেধ করে। এসময় কথা না শোনায় ডাস্টার নিক্ষেপ করে ফরিদা আক্তার। ডাস্টারের আঘাতে মাথা কেটে যায় উর্মির। সাথে সাথে বিদ্যালয়ের আরেক সহকারি শিক্ষক ইলিয়াস আহমেদ স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। পরে উর্মির বাবা এসে উর্মিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করে। সেখান থেকে উর্মির মাথার কেটে যাওয়া স্থানে দুটি সেলাই করে দেয়।
সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুরে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকদের অফিস কক্ষে সব শিক্ষক বসে আছে। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষক চৌধুরী ফরিদা আক্তার বলেন, ঘটনাটি অসাবধানতা বসত হয়েছে। আমি আমার শিক্ষকতা জীবনে কখনো কোন শিক্ষার্থীর গায়ে হাত দেয় না। আসলে আমি দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছিলাম। একই কক্ষে পরের শিপ্টে তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস হয়। তৃতীয় শ্রেণির ওরা সবাই এসে বারান্দায় দুস্টুমী করছিলো। তখন আমি ওদের বারাদ্দা থেকে সরে যেতে বলি। আমার হাত থেকে অসাবধানবসত ডাস্টার ছুটে গিয়ে উর্মির মাথায় লাগে। বিষয়টি নিয়ে আমি অনুতপ্ত।
আহত শিক্ষার্থী উর্মি জানায়, ’আমি বারান্দায় খেলছিলাম। ফরিদা ম্যাডাম ডাকাডাকির পর ক্লাসরুমে না যাওয়ায় তিনি আমার দিতে ডাস্টার ছুঁড়ে মারেন। আমার মাথায় লাগার সাথে সাথে রক্ত বেরোতে থাকে।’ এ সময় ইলিয়াস স্যার আমাকে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে যায়।
শিশুটির পিতা আয়নাল সেখ জানায়,তার মেয়েকে ডাস্টার দিয়ে আঘাত করায় মাথা ফেটে যায়। তাকে রাজবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার মাথায় দু’টি সেলাই লাগে। ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে ’পুলিশকেস’ হিসাবে সিল মেরে দিলেও আমি থানায় কোন অভিযোগ দেইনি। স্কুল কমিটি ও শিক্ষকরা আমাদের (স্বামী-স্ত্রী)ডেকেছে। স্কুলে গিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে ফেলবো। কারণ আমার মেয়েকে পড়া লেখা করাতে চাই। তবে শিক্ষকরা এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটনায় এটা অনুরোধ।
মূলঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ওই স্কুলে কলম-ডাস্টার ছুঁড়ে মারার ঘটনা নতুন নয়। ইতোপূর্বেও এজাতীয় ঘটনা ঘটেছে। ওই স্কুলে কিছু শিক্ষক আছে,তারা স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িয়ে সমালোচনার জন্মদেয়।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম ম-ল জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। উভয় পক্ষের কাছে শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।