শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
বিয়ের দাবিতে পুলিশ সদস্যের বাড়িতে কলেজছাত্রী তামান্না পালোয়ান।
গাজীপুরের শ্রীপুরে তামান্না পালোয়ান (১৯) নামে এক কলেজছাত্রী চার দিন ধরে এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন। এতে ওই কলেজছাত্রী অনেকটাই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পুলিশ সদস্যের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কলেজছাত্রী তাঁদের বাড়িতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন ওই পুলিশ সদস্য। তিনি বিয়েতে রাজি না থাকায় সমাধান হচ্ছে না।
ওই পুলিশ সদস্যের নাম মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে কর্মরত। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মোহাম্মদ ছাত্তার ঢালীর ছেলে।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী তামান্না পালোয়ান একই ইউনিয়নের ধামলই গ্রামের মো. জসিম উদ্দিন পালোয়ানের মেয়ে। তিনি ঠাকুরগাঁও টেকনিক্যাল বিএম কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি তাঁর বোনের বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে তামান্না জাহাঙ্গীরের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন।
ঘটনার শিকার কলেজছাত্রী তামান্না পালোয়ান বলেন, ‘দীর্ঘ চার বছর ধরে পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক চলছে। হঠাৎ করে সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এদিকে আমার পরিবার অন্য ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে দিতে চাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আমি তাঁর বাড়িতে চলে আসি। আজ চার দিন চলছে, না খেয়ে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত বিয়ে না হবে, ততক্ষণ এ বাড়িতেই থাকব। প্রয়োজনে আমার লাশ যাবে এ বাড়ি থেকে।’
তামান্না বলেন, ‘আমি আসার সঙ্গে সঙ্গে জাহাঙ্গীর আমাকে বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। সে আমাকে চেনে না বলে তাঁর পরিবারকে বলে যায়। এরপর পুলিশ সদস্যের ভাই-বোন আমাকে মারধর করে আহত করে। তাঁকে বিয়ে ছাড়া আমার বিকল্প কোনো রাস্তা খোলা নেই। কারণ, আমাদের প্রেমের সম্পর্ক খুবই গভীরে চলে গেছে।’
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই মেয়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। স্থানীয় কিছু মানুষ মেয়েকে দিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মাঝে মধ্যে কথা হয়েছে। তবে গভীর প্রেম হয়নি।’
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে দুই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি ছেলের পরিবার সমাধান করছে না।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে ছেলের বাবা একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসলে আদালতের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। মেয়ের পরিবারের পক্ষে এখন পর্যন্ত কেউ অবগত করেনি। খোঁজ নিয়ে দেখব। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’