গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি:
জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে আধা-পাকা ধান কাটছেন কৃষকেরা।
গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিকাংশ বোরো ধান পেকে গেছে। তবে শ্রমিকসংকটে কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। ফলে খেতেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির পানি ধানের জমিতে আটকে আছে। কোনো কোনো খেতে হাঁটুপানি। আবার কোনো বিলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানিতে ডুবে ধান নষ্ট হচ্ছে। আবার শ্রমিকসংকটেও ধান কাটতে পারছেন না কৃষক।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ১১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। গত বছর ১০ হাজার ৯২৩ হেক্টরে চাষ হয়েছিল। উপজেলায় গড়ে ৮৫ ভাগ জমির ধান পেকে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নে মারতা বিলের ধান পেকে গেছে। তবে বিলজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে খেতেই নষ্ট হচ্ছে ধান।
মারতা বিলে ধান চাষ করেছেন হাসেন আলী। তিনি বলেন, ‘ধানখেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এক কাঠা জমির ধান কেটে নেওয়ার জন্য ১ হাজার টাকা লাগছে, তবুও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধান অতিরিক্ত পেকে খেতেই পড়ে যাচ্ছে। আর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ধান নষ্ট হচ্ছে।’
উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে পাথারপাড়া গ্রামের কৃষক আমির আলী বলেন, বোরো মৌসুমে তিনি ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করেছেন। ধান পেকে গেলেও শ্রমিক না পাওয়ায় কেটে বাড়িতে আনতে পারছেন না। দু-এক দিনের মধ্যে কেটে মাড়াই না করতে পারলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে জানান এ কৃষক।
মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম খোকন এ বিষয়ে বলেন, বোরো মৌসুমে ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে ধান চাষ হয়েছে। এ বছর ধানের ভালো ফলন। কিন্তু শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। অপর দিকে অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ধানের ক্ষতি হচ্ছে।
শ্রীপুর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন বলেন, এ বছর শ্রীপুর উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ফলনও তুলনামূলক ভালো। কিন্তু শেষ সময়ে এসে শ্রমিকসংকট দেখা দেওয়ায় পাকা ধানের ক্ষতি হচ্ছে। ঈদের কারণে অনেক ধান কাটার শ্রমিক গ্রামে চলে গেছেন। এ কারণে শ্রীপুরে শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে দু-এক দিনের মধ্যে এই সংকট কেটে যাবে।