নিজস্ব প্রতিবেদক :
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাগ্নীকে গাছে বাঁধলেন মামার স্বজনেরা
কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ি ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে লায়লা বেগম নামের এক নারীকে গাছে বেঁধে রাখার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সকালে ওই নারীর মামা স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন, তাঁর স্ত্রী শিল্পী আক্তার, বড় বোন জোসনা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে মারপিট করে গাছে বেঁধে রাখার অভিযোগ করেন ওই নারী।
লায়লা বেগম, তাঁর বাবা আ. খালেক ও চাচাতো ভাই বলেন, ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের সৎ ভাতিজা আলহাজ উদ্দিনের সাথে তাঁর ভাগ্নি লায়লার বিয়ে হয়। মোশারফ হোসেনের বাবা মৃত কুরবান আলী তাঁর প্রথম পক্ষের সন্তানদের জমি-জমা থেকে বঞ্চিত করে সব কিছু মোশারফ হোসেনকে লিখে দেন। পরবর্তীতে ভাগ্নি হিসেবে আমাকে তাঁরা এ বাড়িটি দিবেন বলে থাকতে দেয়। এখন তাঁরা বাড়িটা আমাকে দিচ্ছে না। মোশারফ তাঁর এক বন্ধুকে দিয়ে আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়, তাতে রাজি না হওয়াতে তাঁরা গত ৪এপ্রিল সেহরি রান্নার জন্য বের হলে মুখ চেপে জোরপূর্বক আড়ালে ধরে নিয়ে যায়। কৌশলে তখন আমি ছুটে আসি। আজ সপরিবারে তাঁরা আমার ও সন্তানদের ওপর আক্রমণ করে, আমাকে গাছে বেঁধে রেখে চলে যায়। আমরা এর বিচার চাই। কুপ্রস্তাবের বিষয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন, তাঁর স্ত্রী শিল্পী আক্তার, বড় বোন, জোসনা ও মা বলেন, লায়লার নানা মোশারফ হোসেনের বাবা মৃত কুরবান আলী তাঁর প্রথম পক্ষের সন্তানদের সখিপুর উপজেলার তৈলধারা ছোট চওনা এলাকার জমা-জমি দিয়ে গেছেন। ওখানে লায়লার বিয়ে হলে ননদ ও ভাসুরদের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় লায়ল কে সেখান থেকে নিয়ে আসেন বাবা আ. খালেক। পরে ওর কারণে খালেকের সংসারে অশান্তি শুরু হলে মেয়ের জামাইয়ের অনুরোধে কুরবান আলী ওই ভিটায় ওকে থাকতে দেয়। পাঁচ শতাংশ জমি লায়লাকে দেয়ার পরও ওই বাড়ি লিখে দিতে চাপ দিয়ে নানা অশান্তি করেই যাচ্ছে। বুধবার সকালে মা কাঁঠাল পাড়তে গেলে ও বাঁধা দিলে তাকে বেধে রেখে আমরা চলে আসি।
মোশারফ হোসেনের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বলেন, আমার স্বামী খুবই ভালো ও ভালো চরিত্রের মানুষ। বাড়ির লোভেই লায়লা এসব করে নিজেই নিজের ইজ্জতের দুর্নাম করছে।
স্থানীয় ফুলজান (৫০), ছামাতন (৪৮), তাহেরন (৪৫) ও নুরু (৪০) বলেন, লায়লা খুবই দুষ্টু প্রকৃতির মেয়ে। স্বামীর সংসারে অশান্তি ওখানে থাকতে না পেরে বাবার সংসারে চলে আসেন। বাবার সংসারে অশান্তি করলে তাঁর বাবাও তিন/চার বছর আগে বিষ পান করেন। কিছু সুযোগ সন্ধানী লোকজনের প্ররোচনায় জমির জন্য এখন নানা-মামার সংসারে অশান্তি করে, এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে।
এবিষয়ে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শোনা মাত্রই আমাদের অফিসার ও ফোর্সরা তাঁকে উদ্ধার করেন। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।