গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :
গাজীপুর সদর কুনিয়া তারগাছ শিংরাপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসায় ও ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এক বাড়ির মালিককে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
আহত বাড়ির মালিকের নাম মনিরুল ইসলাম মনির। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত। আহত সকলকে আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাতে গাজীপুর কুনিয়া তারগাছ শিংরাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, রাত ৯টার দিকে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি হাবিব-আরিফের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং সদস্যরা শিংপাড়া গলি রাস্তায় অস্ত্রের মুখে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন গণহারে ছিনতাই করে। এই ঘটনার খবর পেয়ে পাশের বাড়ির মালিক মনিরুল ইসলাম মনির ও সাইফুল ইসলাম হাজারীর বাড়ির কয়েকজন ভাড়াটিয়া তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ ও বাধা দেয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হাবিব, আরিফ, ইয়াসিনের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়।
ঘটনার সময় বাড়ির মালিক মনিরুল ইসলাম মনির ও সাইফুল ইসলাম হাজারী শিংপাড়া গলির একটি দোকানের সামনে বসা ছিলেন। কিশোর গ্যাং সদস্যরা মনিরকে দোকানের সামনে ফেলে উপর্যপুরি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। একই সময় সাইফুল ইসলামকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে কিশোর গ্যাং সদস্যরা মনিরের বাড়িতে গিয়েও ভাংচুর চালায়।
তাদের তাণ্ডবে এলাকায় ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে সব দোকানপাট বন্ধ ও রাস্থাঘাট খালি হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা স্থান ত্যাগ করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ‘মাদকে এলাকার অলিগলি ছেয়ে গেছে। ঘর থেকে বের হলেই মাদক। পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে সব সময় জটলা বেঁধে থাকে মাদককারবারি কিশোর গ্যাং সদস্যরা। এদের ভিড় ঠেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজে যায় ছেলেমেয়েরা। এতে সন্তানদের নিয়ে আমাদের সব সময় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকতে হয়।’
আহত মনিরুলের স্বজনদের অভিযোগ, সন্ত্রাসী হাবিবুল্লাহ (২১) স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম দুলালের বাড়িতে থাকেন। তাই কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম দুলাল বলেন, ‘মাদক কারবারি বা কিশোর গ্যাং সদস্যদের কখনো আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। তবে হাবিবুল্লাহ একসময় আমার বাড়িতে নিয়মিত আসতো। শাকিল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমিই তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছিলাম। জেল থেকে বের হওয়ার পর আমি তাকে আর আশ্রয় দেইনি। বরং তাকে সংশোধনের জন্য বহু চেষ্টা করেছি। কিন্তু খারাপ তো খারাপই থেকে যায়।’
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাটি খুবই রোমহর্ষক। আশপাশের বিভিন্ন বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।