নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাত আনুমানিক ৩টা। পুলিশ দিচ্ছে পাহারা। তাদের সামনে দিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যায় একটি গাড়ি। এরপর রাস্তায় নজর দিলে চোখে পড়ে ফোটা ফোটা রক্ত। বিষয়টি তাদেরকে ভাবিয়ে তুলে।
এরপর নৈশ প্রহরীর মাধ্যমে গাড়িটি অবস্থান জানতে চেষ্টা করে পুলিশ। রাস্তায় রাস্তায় রক্তের ফোটা দেখে কৌশলে সামনে এগিয়ে বের হয় আসল রহস্য। হাতেনাতে ধরা পড়লো চুরি করা গরুর গোশতসহ কায়কোবাদ নামে এক যুবক।
সোমবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পৌরশহরের লাল বাজার এলাকায় কসাই এরশাদ মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়। অভিনব কায়দায় চুরি করা গরু জবাই করে গোমত বিক্রি করতে এসে তিনি পুলিশের হাতে আটক হন।
আটক কায়কোবাদ উপজেলার দক্ষিণ ইউপির ছোট কুড়িপাইকা গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মিয়ার ছেলে ও উপজেলা পরিষদর চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূইয়ার ভাতিজা। এ সময় পুলিশ গোশত, জবাইয়ের ছুরি, চাপাতি রশিসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি উদ্ধার করে। এ ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার রাত ১ টার দিকে কায়কোবাদসহ তার সঙ্গীরা পাশ্ববর্তী বড় কুড়িপাইকা গ্রামের হাজী ফরিদ মাস্টারের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে গরুটি চুরি করে। পরে মাস্টারের প্রতিবেশী জমশিদ মিয়ার বসত ঘরে নিয়ে ওই রাতেই গরুটি বিক্রির জন্য জবাই করে। এরপর জবাইকৃত গোশত বিক্রি করতে কসাই এরশাদ মিয়ার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় পুলিশ তাকে আটক করে।
বড় কুড়িপাইকা গ্রামের হাজী মো. ফরিদ মাস্টারের ছেলে মো. আবুল ফয়সাল বলেন, দীর্ঘ দিন ধরেই তারা বাড়িতে কয়েকটি গরু পালন করছেন। এরইমধ্যে একটি গরু এই কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। তাই নেওয়া হচ্ছে ওই গরুর বাড়তি নজর। রোববার সন্ধ্যায় ভালো করে দেখে গোয়াল ঘর তালা লাগানো হয়। এরপর রাত ১১ টার দিকে গোয়াল ঘর পুনরায় দেখে পরিবারের লোকজন ঘুমাতে যান। রাত ৪টার দিকে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী তাদের বাড়িতে এসে ডাকাডাকি শুরু করেন। এক পর্যায়ে ঘরের লোকজন ঘুম থেকে উঠে আসেন।
ইউপি সদস্য বলেন আপনাদের গোয়াল ঘরে থাকা গরু আছে কি না। সঙ্গে সঙ্গে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখতে পান একটি গরু নেই।
তিনি বলেন চোরসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে গরুটি জবাই করা হয়েছে। মাংস বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। আমাকে ফোন করে তারা বলেছে আপনাদের বাড়ি দেখতে। তাৎক্ষণিকভাবে থানায় গিয়ে তারা নিশ্চিত হন চুরি হওয়া গরুটি ছিল তাদের।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র এলাকা থেকে গরু চুরি করে গোশত নিয়ে কসাই এরশাদ মিয়ার কাছে বিক্রি করছেন। এ ঘটনার পর থেকে এরশাদ মিয়া পলাতক রয়েছেন।
আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, আটক কায়কোবাদের বিরুদ্ধে চুরিসহ থানায় চারটি মামলা রয়েছে। এ চুরির ঘটনায় জড়িত সবাইকে আটকের চেষ্টা চলছে। জবাই করা গরুর ১০৫ কেজি গোশত ৩ টি বস্তায় ছিল। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ৭৩ হাজার টাকা। চুরি যাওয়া গরুর চামড়াসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।