শ্রীপুর (গাজীপুরে) প্রতিনিধি:
স্কুলছাত্রীকে তুলে নেওয়ার ৪দিন পর ফিরিয়ে দিল অভিযুক্তের পরিবার
গাজীপুরের শ্রীপুরে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে তুলে নেওয়ার চার দিন পর ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ফিরিয়ে দিয়েছে অভিযুক্তের স্বজনেরা। মেয়েটির পরিবারকে আইনি সহায়তা না দিয়ে ইউপি সদস্যের মাধ্যমে পুলিশ পরিবারের কাছে জোর করে হস্তান্তর করে দেয়।
অপহৃত স্কুলছাত্রীকে চার দিন একটি ঘরে অবরুদ্ধ করে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্কুলছাত্রীর স্বজনেরা। এ ছাড়া অভিযুক্ত নাসির চার দিন অবরুদ্ধ করে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর স্বজনদের। স্কুলছাত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় ছাত্রীর বাবার স্থানীয় ইউপি সদস্য খন্দকার হারুন অর রশিদ জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন বলেও অভিযোগ তাঁদের।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অপহৃত স্কুলছাত্রীকে ইউপি সদস্যের বাড়িতে ফিরিয়ে দেয় অভিযুক্ত নাসিরের বাবা। ভুক্তভোগী স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত মো. নাসির উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী বাসস্ট্যান্ড এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে।
স্কুলছাত্রীর দাদি জানান, গত ১৬ জুলাই বাড়ির পাশে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত বরমা ব্রিজ এলাকায় হাঁটাহাঁটি করার সময় অভিযুক্ত নাসির তাঁর নাতনিকে জোর করে তুলে নিয়ে যান। এরপর পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্ত নাসিরের আত্মীয়দের বাসাবাড়িতে খোঁজ খবর নিয়ে নাতনির কোনো সন্ধান পাননি তাঁরা। এ নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বরমী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য খন্দকার হারুন অর রশিদ ফোনে তাঁর ছেলেকে ডেকে নিয়ে নাতনিকে বুঝিয়ে দেন। এ সময় ওয়ার্ড সদস্য তাঁর ছেলের কাছ থেকে জোর করে সাদা কাগজে সাক্ষর করে নেন।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করব। এর আগেই সন্দেহের জেরে অভিযুক্ত নাসিরকে আসামি করে সাধারণ ডায়েরি করি। আজ বৃহস্পতিবার রাতে থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করব।’
এ নিয়ে বরমী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য খন্দকার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘পুলিশের ফোন পাওয়ার পর অভিযুক্ত নাসিরের পরিবারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেয়েকে হাজির করার জন্য চাপ সৃষ্টি করি। ওরা ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়েকে নিয়ে আমার বাসায় হাজির হয়। এরপর পুলিশকে ফোন করলে শ্রীপুর থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাকের কথা মতো মেয়েকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জোর করে তাঁর কাছ থেকে কোনো ধরনের স্বাক্ষর রাখিনি।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে স্বজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
চার দিন পর অবরুদ্ধ করে ধর্ষণের পর কি করে মেয়েকে বুঝিয়ে দিলেন? কোনো ধরনের মামলা বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা কি করেছেন ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষার্থীর? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।