মো: আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
গাজীপুর শ্রীপুরে দাদির কাছে ঈদের পোশাক না পাওয়ায় অভিমানে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫দিন পর মৃত্যু হয়েছে আফরিন (১৫) নামে এক কিশোরীর।
(মঙ্গলবার) ২৫ এপ্রিল সকালে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোরী আফরিন (১৫) শ্রীপুর উপজেলা প্রহল্লাদপুর ইউনিয়ন ,করলা মাধবপুর গ্ৰামের মৃত জমির উদ্দিনের মেয়ে।
গত বৃহস্পতিবার ২৮ রমজান সন্ধ্যায় নতুন জামা কেনার বায়না ধরায়,না পেয়ে দাদীর সাথে অভিমানে বিষ পান করে আত্ন হত্যার চেষ্টা করে ওই কিশোরী। সে প্রহলাদপুর ফাউগান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায় গত ২০ এপ্রিল ২৩ইং, ২৮শে রমজান আফরিন ঈদের জন্য নতুন কাপরের বায়না ধরে দাদির কাছে। শুক্রবার কিনে দিবে বলে দাদি তাকে শান্ত থাকতে বলে। কিন্তু সে অভিমানে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে নিজ গৃহের দরজা লাগিয়ে বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারে পরবর্তীতে দ্রুত গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা ।
হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর আজ সকাল ৭টার সময় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজে তার মৃত্যু হয় ।
নিহতের দাদী দেশ টিভি বাংলা কে জানান,আমার নাতিনে ঈদের নতুন জামা কাপড় কিনতে বাজারে যাইতে চাইছিল, আমি বলছি আফরিন ঈদ শনিবার দিন হবে শুক্রবার তরে নতুন কাপড় কিনে দিব ।একটা রাইত সহ্য হয়লো না আমার আফরিনের। ৬ মাসের আফরিনকে রেখে তার মা ও বাবা মরছে কত কষ্ট করে মানুষ করছি কি বুঝে তুই বিষ খাইলিরে আমার কলিজা।
নিহত ওই কিশোরীর বড় ভাই সুজন দেশ টিভি বাংলা কে জানান,
আমি কষ্টে চললেও বোনেরে কষ্ট দিতাম না আমাদের ২ ভাইয়ের কলিজার টুকরা ছিল আফরিন। অনেক চেষ্টা করেছি বোনকে বাঁচানোর জন্য, আল্লাহ আমাদের সোনার টুকরা বোনকে নিয়ে গেল।
প্রহল্লাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য নাছরিন বলেন, দেশ টিভি বাংলা কে বলেন আফরিন গরীব ঘরে জন্মগ্ৰহণ করলেও তার আচার আচরণ ভালো ছিল । শুনেছি ঈদের জামা কিনতে দেরি করায় দাদীর সাথে অভিমান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে । চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে । আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন ।
ওই এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মোঃ আমির উদ্দিন বলেন মা বাপ মরা মেয়ে আফরিনকে তার দুই ভাই ও দাদী কষ্ট করে লালন পালন করে আসছে । মেয়টি মেধাবী ছিল এমন ঘটনা ঘটাবে চিন্তার বাহিরে ছিল ।আমি ব্যক্তিগত ভাবে স্নেহ করতাম ।
ঘটনার বিষয়ে শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এ.এফ.এম নাসিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘটনার বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর এজাহার করেছে নিহতের পরিবার। জানতে পারি নিহত কিশোরী ৫দিন পূর্বে আত্মহত্যার চেষ্টা করে পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। যেহেতু পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ বাদী হয়নি, পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।