মো: আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
শ্রমিকদের ওপর রাবার বুলেট, লাঠিপেটা ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
গাজীপুরের শ্রীপুরে বেতন ভাতার দাবিতে চলমান আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর রাবার বুলেট, লাঠিপেটা ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এতে ছোটাছুটি করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানার গুদাম ও শিল্প পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
আজ রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের ডার্ড কম্পোজিট কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
কারখানায় শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া বেতনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। আজ রোববার সকালে মালিক আসার কথা থাকলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত মালিক কারখানায় উপস্থিত না হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাদের একটাই দাবি, মালিক আসতে হবে এবং তাঁদের বকেয়া বেতনসহ সকল বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু মালিক সারে ৩টায় কারখানায় আসে। মালিক আসার পর ও শ্রমিকদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায়, কারখানার সকল শ্রমিক এক সঙ্গে মিলিত হন। এরপর শান্তিপূর্ণভাবে কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ হঠাৎ তাঁদের ওপর রাবার বুলেট, লাঠিপেটা ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে বহু শ্রমিক আহত হন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা শিল্প পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ
কারখানার শ্রমিক নাদিম মাহমুদ বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কারখানা মালিক কারখানায় উপস্থিত হয়ে আমাদের শ্রমিক নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসে। দীর্ঘ আলোচনায় কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারিনি। এরপর আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিপেটা ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আমরা ছোটাছুটি করে বের হতে গিয়ে অনেকেই আহত হই।’
শ্রীপুরে বকেয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও অবস্থান করছেন কারখানার শ্রমিকেরাশ্রীপুরে বকেয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও অবস্থান করছেন কারখানার শ্রমিকেরা
গাজীপুর শিল্প পুলিশের শ্রীপুর জোনের ইনচার্জ হুমায়ুন কবির বলেন, দেশ টিভি বাংলা কে বলেন‘আলোচনা চলাকালে হঠাৎ করেই শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হয়ে পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।’
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আল মামুন
দেশ টিভি বাংলা কে বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ৪১ জন শ্রমিক প্রতিনিধি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা, শিল্প পুলিশের সদস্য থানা-পুলিশের সদস্য উপজেলা প্রশাসনের সদস্যদের নিয়ে কারখানার চতুর্থ তলায় আলোচনা চলছিল। এ সময় হঠাৎ করে নিচে অবস্থান নেওয়া শ্রমিকেরা কারখানার দরজা জানালার গ্লাস ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে তারা কারখানার ইউনিট-২ এর একটি গুদামে আগুন জালিয়ে দেয়। এতে নিরাপত্তা জন্য টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপর শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বের হয়ে শিল্প পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।