মো: আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে এসএসসির গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে যায় এক শিক্ষার্থী। তাঁর কাছে ৩০০ টাকা দাবি করেন শিক্ষিকা শাহনাজ পারভীন। এ সময় শিক্ষার্থী কাছে টাকা নেই জানালে শিক্ষিকা বলেন, ‘টাকা না দিলে পরীক্ষা হবে না, দ্রুত বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসো, টাকা না দিলে পূর্ণ নাম্বার পাবে না। তোমাকে পূর্ণ নাম্বার দেব না।’
এরপর এসএসসি পরীক্ষার্থী দৌড়ে এসে বাসা থেকে তিন শ টাকা নিয়ে ম্যাডামকে দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। ঘটনাটি জানাজানির পর ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকসহ এলাকায় সমালোচনা শুরু হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এভাবে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এমন ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগের এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষিকা শাহনাজ পারভীন বাউনী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলে, ‘আমি গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য দুপুর ২টার দিকে শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে যাই। হলে দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা শাহনাজ পারভীন আমাকে বলেন, ‘‘টাকা দাও, টাকা না দিলে পরীক্ষা হবে না। আর আমিও পূর্ণ নাম্বার দিতে পারব না।’’ এরপর আমি আমার মামার সঙ্গে ম্যাডামকে কথা বলতে বলি। কিন্তু তিনি কোনো কথা না বলে টাকা নিয়ে আসতে বলেন। এরপর দৌড়ে এসে শ্রীপুর থানার মোড় থেকে মামার এক বন্ধুর দোকান থেকে টাকা নিয়ে ম্যাডামকে দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেই।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীর পুলিশ সদস্য মামা বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি রীতিমতো অবাক হয়েছি। আমি নিজে ফোন দিয়ে কথা বলতে চাইলেও তিনি কোনো কথা বলতে চাননি। টাকা ছাড়া উনি পরীক্ষা নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এরপর আমি আমার এক বন্ধুর দোকানে ফোন করে টাকা দিতে বলি। আমার ভাগনিকে প্রায় আধা কিলোমিটার পথ হেঁটে টাকা এনে শিক্ষক দিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক শাহনাজ পারভীন দেশ টিভি বাংলা কে বলেন, ‘কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য খরচ লাগে, আমি সেই খরচ চেয়েছি। আমি টাকা দিতে বলেছি। সে কোথায় থেকে এনে দিয়েছে সেটা তার বিষয়। আমাকে টাকা দেওয়ার পর পরীক্ষা নিয়েছি। তা ছাড়া সে তেমন কিছু লিখতে বলতে পারেনি। তাই তাকে পূর্ণ নাম্বার দেওয়া যাবে না বলছি।’
শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুল হাসান দেশ টিভি বাংলা কে বলেন, ‘এ বিষয়ে ছাত্রীর অভিভাবক, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষা চলাকালে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিয়ে অভিযোগের প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’