মো: আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
শ্রমিকদের হয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ফেরার সময় খুন হলেন শ্রমিক নেতা।
গাজীপুর মহানগরীর সাতাইশ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় এক শ্রমিক নেতা নিহত হয়েছেন। হামলায় আরও দুই শ্রমিক নেতা আহত হয়েছেন। নিহত শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম শহীদ (৫০) গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা দিন রাজাবাড়ি ইউনিয়নের মিটালু গ্রামের মৃত আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের গাজীপুর জেলার সভাপতি।
আহত অপর দুই শ্রমিক নেতা হলেন—মোস্তফা কামাল (২৬) ও আহমেদ শরীফ (৩৫)।
গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানায় প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের জন্য গত ২১ জুন শ্রমিকেরা আন্দোলন করেন। বিক্ষোভের মুখে কর্তৃপক্ষ ২৫ জুন (রোববার) বেতন পরিশোধের তারিখ দিয়ে নোটিশ দেয়। সেই আশায় শ্রমিকেরা রোববার সারা দিন গেটে অপেক্ষা করেন। কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে শ্রমিকেরা আবার বিক্ষোভ শুরু করেন। দাবি আদায়ে সহযোগিতা করার জন্য শ্রমিক নেতাদের ডাকা হয়। তাঁরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁদের ওপর হামলা হয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের গাজীপুর মহানগরীর সভাপতি শফিকুল ইসলাম দেশ টিভি বাংলা কে জানান, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় দুই মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস বকেয়া রয়েছে। কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার শ্রমিক কাজ করে। রোববার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ কথা অনুযায়ী বেতন–ভাতা পরিশোধ করেনি। এ কারণে সন্ধ্যা ৬টায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা তাঁদের পক্ষে কথা বলার জন্য শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম শহীদসহ আরও দুই নেতার সহযোগিতা কামনা করেন।
শ্রমিকদের অনুরোধে তাঁরা ওই কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে তাঁরা বের হয়ে আসার সময় কারখানার সামনেই অজ্ঞাত পরিচয় সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম শহীদ ও অপর দুইজন গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় তাইরুন্নেসা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসা শহিদুল ইসলাম শহীদকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে গাছা থানা-পুলিশ হাসপাতালে যায় এবং তাঁদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী দেশ টিভি বাংলা কে বলেন, ‘হামলার ঘটনাটি ঘটেছে মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকায়। কিন্তু যে হাসপাতালে মারা গেছেন সেটি গাছা থানায় এলাকায় পড়েছে। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসে একজনের মরদেহ এবং আহত অবস্থায় দুজনকে পেয়েছি। কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।