ঘিওরে বৈরি আবহাওয়ায় ক্রেতাশূন্য, লোকসানে ব্যবসায়ীরা
আল মামুন ঘিওর মানিকগঞ্জ
সূর্যটা যেন অভিমান করে আছে! আকাশটা যেন মেঘেদের বাড়ি হয়েছে। নির্ঝনীর অঝর ধারা ঝরছে। চারদিকে আঁধার আঁধার ভাব। প্রকৃতি যেন মুখ ভার করে কারো ওপর অভিমান করেছে। ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন মানিকগঞ্জের ঘিওর অঞ্চলের আকাশের চিত্র এমনটিই ছিল।
বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় এবারের ঈদে দর্শনার্থী সমাগম নেই বললেই চলে ঘিওরের বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে। যানবাহন স্বল্পতা , জলাবদ্ধতা ও বৃষ্টির কারণে অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে ঈদ আনন্দ।
ঈদের দিন বৃহস্পতিবার ( ২৯ জুন ) থেকে টানা দুই দিন থেমে থেমে ভারী ও হালকা বৃষ্টির কারণে মানুষের ভেস্তে গেছে ঈদের সব পরিকল্পনা। এবার ঘরে বসেই ঈদের ছুটিতে অলস সময় অনেকটা পানসেভাবে পার করেছেন ঘিওরবাসী।
বৃষ্টিতে আটকাপড়া ব্যক্তিরা জানান, ঈদ ছাড়া দীর্ঘ ছুটি খুব একটা পাওয়া যায় না। এবারও লম্বা ছুটি হয়েছিল। আর এ কারণে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তুতি কোনো অংশে কম ছিল না। টানা ছুটিতে পরিবার-পরিজন, বন্ধুদের নিয়ে একসঙ্গে হুমড়ি খেয়ে পড়ার আনন্দ মাটি করে দিলো বৃষ্টি। বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় এবারের ঈদে দর্শনার্থী সমাগম নেই বললেই চলে ঘিওরের বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে।
আক্ষেপ করে চরবাইলজুরী পঞ্চ রাস্তা এলাকার রতন নামের এক আম ব্যবসায়ী বলেন, গত কয়েক দিনে আষাঢ়ের ঢল নেমেছে ঘিওরে। যার কারণে ঈদের নামাজের জামাত ঈদগাহে হয়নি। মসজিদে পড়েছি নামাজ। টানা তাপদাহ আর তীব্র গরমের পর এ বৃষ্টি আমাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে, সঙ্গে শেষ করেছে ঈদের ঘোরাঘুরির আনন্দ।
মাইলাগী এলাকার সবুজ নামের এক ব্যক্তি বলেন, বৃষ্টির কারণে বিনোদন কেন্দ্রে ঘোরাঘুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। গাড়িতে করে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গিয়েও আটকে পড়েছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
তবে অনেকে বলছেন, বৃষ্টিতে একদিকে অসহ্য গরম কিছুটা কমেছে অন্যদিকে কোরবানির রক্ত ও বর্জ্য ধুয়ে-মুছে গেছে।
ঈদের মৌসুমে ঘিওর বাজার প্রায় ফাঁকা হয়ে গেলেও, প্রতিবছর ঈদের সময় বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে থাকতো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। তবে এ বছরের চিত্র একেবারেই উল্টো। বৃষ্টিতে ভেস্তে যায় ঈদের ঘোরাঘুরির পরিকল্পনা। প্রায় সব বিনোদন কেন্দ্র ফাঁকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘিওর নদীর উপর সেতু , মেঘ বালিকা, চরবাইলজুরী পঞ্চ রাস্তার ইসাক মামা , শাপলা রেস্টুরেন্ট , আলমদিনা রেস্টুরেন্ট, নিজাম সুইটসসহ বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে এবারের ঈদুল আজহার দ্বিতীয়দিন অনেকটা দর্শনার্থী শূন্য গেছে। ঈদের দিন সকাল থেকেই বৃষ্টিতে বিড়ম্বনায় পড়ে এলাকাবাসী। যা অব্যাহত রয়েছে ঈদের দ্বিতীয় দিন শুক্তবার ( ৩০ জুন ) সন্ধ্যা পর্যন্ত। বৃষ্টিতে উৎসব অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে। পানিতে রাস্তাঘাট বেশকিছু এলাকায় তলিয়ে যাওয়ায় মাঝে মধ্যে বৃষ্টি থামলেও দুর্ভোগের কারণে রাস্তায় নামেনি অনেকে। বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় এবারের ঈদে দর্শনার্থী নেই বললেই চলে।
নিজাম সুইটসের প্রোভাইডার মো; সাইফুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র বৃষ্টির কারণেই বিনোদন কেন্দ্রে ঈদের সময়ের চিরাচরিত চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ বৃষ্টিতে বাড়তি মুনাফা থেকে হাত গুটিয়ে নিতে হচ্ছে সকল ব্যবসায়ীকে। যে পরিমাণ মুনাফা হবার কথা ছিল, সে টার্গেট পূরণ হবে না। টানা দুই দিন ক্রেতা নেই বললেই চলে।