মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
গাজীপুরে র্যাব-১ এর বিশেষ অভিযানে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার চাঞ্চল্যকর গৃহবধু হাফিজা আক্তার হত্যার আসামী মাসুদ রানাকে (৪৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।গত শনিবার (২৬ আগস্ট ২০২৩) রাতে আশুলিয়া থানাধীন কোন্ডলবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (২৭ আগস্ট ২০২৩) মাসুদ রানাকে গ্রেফতারের পর র্যাব-১ সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানায়।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মাসুদ রানা (৪৬) আনুমানিক ৫ বছর পূর্বে তার আগের স্ত্রী থাকার বিষয়টি গোপন করে ভিকটিম হাফিজা আক্তার (২৮)কে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার দিন ২৭ জুন তাদের মধ্যে উক্ত বিষয়ে পুনরায় ঝগড়া হয় এবং ২৮ জুন আসামী মাসুদ রানা ভিকটিমের ছোট ভাই সাব্বিরকে ফোন করে জানায় যে তার বোন অসুস্থ দ্রুত আসামীর ভাড়া বাসায় যেতে বলে। ভিকটিমের ছোট ভাই সাব্বির তার ভগ্নিপতি বাসায় গিয়ে তার বোনকে ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত অবস্থায় পান। মাসুদ রানা বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালায়। এদিন ভিকটিমের পিতা মোঃ হাসেম সিকদার কালিয়াকৈর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রেরণ করে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হাফিজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে রিপোর্ট আসলে গত ২৫ জুলাই নিহত হাফিজার বাবা হাশেম সিকদার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মাসুদ রানা(৪৬) সহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ রানা র্যাবকে জানায়, তার বুলবুলি (৩৬) নামে একজন স্ত্রী আছে, যিনি আসামীর নিজ বাড়ী জামালপুর বসবাস করেন। ওই সংসারে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সে প্রথম স্ত্রী বুলবুলি(৩৬) এর বিবাহের কথা গোপন করে পাঁচ বছর পূর্বে ভিকটিম হাফিজা আক্তারকে বিয়ে করে। বিয়ের বিষয় নিয়ে ভিকটিমের সাথে তার প্রায় ঝগড়া হত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জুন রাত অনুমান ১০টা হতে ২৮ জুন দুপুরের মধ্যবর্তী সময়ে মাসুদ রানাসহ আরও কয়েকজন মিলে শ্বাসরোধ হত্যা করে। বিষয়টিকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করার জন্য ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।
র্যাব-১ এর কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ ইয়াসির আরাফাত হোসেন বলেন, মামলা হওয়ার পর আসামী মাসুদ রানা পলাতক ছিলেন। এই ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ব্যপক প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে এই হত্যাকান্ডের আসামী গ্রেফতারের জন্য র্যাবের একটি দল ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতা গত শনিবার রাত ৮টার দিকে র্যাব-১ এর আভিযানিকদল বিশেষ অভিযান চালিয়ে আশুলিয়ার কোন্ডলবাগের শাহাজউদ্দিন ভূইয়ার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। মাসুদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া, গাজীপুর সদর, জয়দেবপুর থানায় ৫টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।