মোঃ আব্দুল বাতেন বাচ্চু,
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের গুতারবাজার এলাকায় মালেকার লাশ দেখতে উৎসব জনতা ভিড়।
গাজীপুরের শ্রীপুরে কলাবাগান থেকে মালেকা (৩৫) নামের এক গৃহবধূর দগ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের গুতারবাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহতের স্বামী সহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে
দুই জন কে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের বিষয় নিশ্চিত করেন গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আজমীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘নিহতের স্বামী সহ দুই জন কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।’
নিহত মালেকা শ্রীপুর উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের কাঠমিস্ত্রি বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী।
মালেকার ছোটভাই মো. সুজন মিয়া জানান, ২০ বছর আগে বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে মালেকার বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী অনেক দিন ধরে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। ১৫ দিন আগেও তাঁকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
সুজন মিয়া বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত ৩টার দিকে আমাদের জানানো হয় মালেকাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর রাতে আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাই নাই। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে জানতে পারি বাড়ির অদূরে কলাবাগানে আগুনে পোড়ানো মরদেহ পড়ে আছে। এরপর আমরা কয়েকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি আগুন পোড়ানো বিকৃত মরদেহ পড়ে আছে।’
সুজন মিয়া আরও বলেন, ‘গতকাল রাতে মালেকাকে স্বামী বাচ্চু অনেক মারধর করছে। নির্যাতনের পর বাচ্চু আমার বোনকে পুড়িয়ে মারে। পরে আত্মহত্যার নাটক সাজায়। বোনের স্বামীর বাড়ির লোকজন জানায়, মালেকা গায় আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার বোন দুই সন্তানদের রেখে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না।’
নিহতের ছেলে মানিক মিয়া বলে, ‘মা-বাবার মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত ঝগড়াঝাঁটি হয়। গতকাল বুধবার রাতে আমি আমার কারখানায় কর্মরতছিলাম। কর্মস্থল থেকে সকাল ৭টার দিকে বাড়িতে যাই। কিছুক্ষণ পর শুনতে পাই মায়ের মরদেহ পাওয়া গেছে। আমি মনে করতাম সব সময় ঝগড়াঝাঁটি হলে মা অন্য বাড়িতে চলে যেত। কিন্তু আজ এই দৃশ্য দেখতে হবে বুঝতে পারিনি।’
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর পোড়ানো বিকৃত মরদেহ দেখতে পাই। আগুনে পোড়ানোর বিষয়টি বলা যাচ্ছে না। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।’
গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টির তদন্ত চলছে। ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গৃহবধূর গায়ে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা চেষ্টা চালানো হয়েছে।’
আজমীর হোসেন আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট মর্গে পাঠানো হবে।’